সকল ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন গীতিকার মোঃ আছাব আলী।
মোঃ আবুল বশর সিলেট।
একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনের অবিস্মরণীয় একটি অধ্যায়। এদিন বাঙালি জাতি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। ১৯৫২ সালের এই দিনেই সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকেই আত্মোৎসর্গ করেছিলেন। তাঁদের এই আত্মত্যাগ শুধু একটি দেশের ইতিহাসে সীমাবদ্ধ নয়; বরং গোটা বিশ্বে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। এটি বাঙালি জাতির অহংকার ও গৌরবের প্রতীক। আছাব আলী আরো বলেন,
এ আন্দোলনের পটভূমি গড়ে ওঠে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়, যার দুটি অংশ ছিল—পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)। পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বাংলাভাষী হলেও শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ঘোষণা করেন, “উর্দু এবং কেবল উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।” এই ঘোষণায় বাঙালি জাতির মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয় এবং বাংলাভাষার পক্ষে ছাত্রসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদে সোচ্চার হন। ভাষা আন্দোলনের প্রথম ভিত্তি স্থাপিত হয় ১৯৪৮ সালে, যখন তমদ্দুন মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলে। ক্রমে এই আন্দোলন জোরদার হয় এবং ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা রাষ্ট্রভাষার দাবিতে বিক্ষোভে নামেন। সেদিন পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকেই শহিদ হন। এই পটভূমির কারণেই ভাষা আন্দোলন কেবল একটি ভাষার অধিকারের সংগ্রাম ছিল না, বরং তা বাঙালি জাতির আত্মপরিচয় ও স্বাধীনতার আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করে।